সবার উপরে মানুষ সত্য,তাহার উপরে নাই।

আমাদের সমাজে দিনদিন উচু শ্রেণীর মানুষ এবং নিচু শ্রেণীর মানুষদের মধ্যে অনেক ভেদাভেদ সৃষ্টি হচ্ছে। সম্প্রতি কিছু ঘটনা আমার সাথে ঘটেছে এমন দুইটা ঘটনার কথা বলতে যাচ্ছি।

প্রথমত, ৩য় রোজার একটা কাহিনী বলি, প্রতিদিনের মত আমাদের বাসার খালা আমাদের রাতের খাবার বানানোর জন্যে আমাদের বাসায় (ম্যাস) আসে, তবে প্রতিদিনের সময় থেকে একটু লেইট আছে যার কারনে  ইফতারের পূর্বে রান্না শেষ করতে পারেন নি। যেই ঘটনা বলতে চাই সেটা হচ্ছে  ঐদিন খালা রান্না শেষ করতে না পারায় উনার ইফতারটুকু করার সময় হয়নি ,তেমনটা ঠীক না ঐদিন আমার বাসার সবাই আরামে ইফতার করতেছিল কিন্ত কেউ একটাবার ঐ মানুষটাকে ইফতার অফার করে নি, অবশেষে বাসায় এসে আমি ইফতার অফার করার ফলে উনি ইফতার করতে পারছে। মানুষদের মধ্যে এত পার্থক্য হইছে যে একটা মানুষ প্রতিদিন আমাদের জন্য এত কষ্ট করে তাকে আমরা আমাদের ভাগ থেকে একটু খাবার দিয়ে ইফতার করাতে পারি না, কেন এত্ত বৈষম্য কেন আমাদের মধ্যে।


দিত্বীয়ত, আজকে ৪র্থ রোজা, আমার একটা দাওয়াত ছিল একটি ক্লাব আয়োজিত ইফতার অনুষ্টানে যেখানে উপস্থিত ছিলেন ঐ জায়গার এমপিসহ অনেক নামীদামী লোকেরা। ঐ জায়গায় ইফতার করতে গিয়ে দেখি মসজিদের মধ্যে অনেক মানুষ বেশ ভালোই আয়োজন করা হইছে, কিন্ত কী হবে এত্ত আয়োজন করে যখন ঐ শ্রেনী বৈষম্যের কারনে কিছু লোক (ওয়েটার) তাদের ইফতারটুকু করতে পারে নি বড় বড় সাহেবদের সার্ভ করার কারনে দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিল কিন্ত আমার একার কথায় কিছু হবে না তাই কষ্ট চেপে মসজিদে বসে তাদের এই  অপকর্মগুলোকে সহ্য করতে হচ্ছিল। তারাও তো উনাদের মত মানুষ তারাও উনাদের মতো রোজা ছিল, উনাদের কাছে বড় বড় মানুষদের চামছামি করাটাই প্রাধান্য পায় ওয়েটারদের ইফতারটা প্রাধান্য পায় না। যাই হোক আমি ঐসব বড় লোকদের বলতে চাই যতই ইফতার করান না কেনো যতদিন পর্যন্ত আপনারা ঐসব (ওয়েটার) লোকদের কষ্ট বুঝবেন না ততদিন আপনাদের কোনো ইবাদাতই গ্রহনযোগ্য হবে না। আগে সব মানুষকে সমান ভাবতে শিখেন তাহলেই আপনাদের ইবাদাত কাজে আসবে অন্যথায় কাজে আসবে না।


সমাজের নিচু শ্রেণীর মানুষরা সারাদিন কষ্ট করে আপনাদের মতো বড়লোকদের জন্যে, ওরা কষ্ট করে বলে ঘরে বসে আপনি আরামে জীবনযাপন করতেছেন, ওরা কষ্ট করে বলে আপনাদের কোনো কাজ নিজ হাতে করতে হয় না, বাসায় যখন কোনো বুয়া থাকবে না তখন ঐ নিচু লোক কতটা কষ্ট করে আপনার জন্যে তা বুঝবেন।
মাঝেমধ্যে ঐ নিচু শ্রেনীর লোকদের কষ্টটা বোঝার চেষ্টা করবেন হয়তো তারা একটূ খুশী হবে। সবাইকে সমান ভাববেন কারন আপনিও এক আল্লাহর তৈরী, আপনার বাবার অনেক পরিমান অর্থসম্পদ আছে বলে আপনি অনেক সুখে আসবেন, কিন্ত মনে দুনিয়ার সুখই আসল সুখ না। মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ আল্লাহও সহ্য করেন না। পরিশেষে বলতে চাই অন্তত পক্ষে রমজান মাস উপলক্ষ্যে তাদের কষ্টটা বোঝার চেষ্টা করেন, তাদের কষ্টে একটু ভাগ বসান, অনেক আনন্দ এবং দোয়া পাবেন।

সবার কাছে অবশেষে বলতে চাই আর কতো ভেদাভেদ করবেন, আসেন সবাই বুকে বুক মিলিয়ে ভেদাভেদ ভুলে যাই। কবির ভাষায়ঃ
                                                সবার উপরে মানুষ সত্য,তাহার উপরে নাই।
[বি দ্রঃ লেখা হয়তো গোছালো হয়নি এবং বানান ভুল হতে পারে, ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]

No comments

Powered by Blogger.